Latest

মঙ্গলবার, ১৯ জুলাই, ২০২২

জুলাই ১৯, ২০২২

ওষুধ ছাড়াই চিরতরে গ্যাস্ট্রিক দূর করার উপায়

ওষুধ ছাড়াই  চিরতরে গ্যাস্ট্রিক দূর করার উপায়


হজমের সমস্যার সঙ্গী হয়ে আসে গ্যাস্ট্রিক। খাবারের বিষয়ে আমরা তো বরাবরই অসতর্ক। আবার চারপাশে এমন সব লোভনীয় খাবার থাকে যে, চাইলেও নিজেকে সংযত রাখা যায় না। ফলস্বরূপ গ্যাস্ট্রিক হয় সঙ্গী। শীতের দিনে ভাজাভুজি খাবার একটু বেশিই খাওয়া হয়। 

আর এর ফলও মেলে হাতেনাতে। তখন গ্যাস্ট্রিক তাড়াতে সাহায্য নিতে হয় ওষুধের। দোকানে যাবেন এক কোম্পানিরই কয়েক ধরনের গ্যাস্টিকের ওষুধ পাবেন। খোঁজ নিয়ে জানুন সারাদেশে যে পরিমাণ এসিডিটির ওষুধ চলে অন্য সব রোগ মিলেও এ পরিমাণ হয় না। 

ওষুধের উপর নির্ভরশীল না হয়ে খাবারের দিকে মনযোগী হউন। যে খাবার গ্যাস্ট্রিক দূর করতে সাহায্য করে সেগুলো খাবারের তালিকায় রাখুন।খাওয়া-দাওয়ায় অনিয়ম, স্বাস্থ্যকর খাবার না খাওয়া, শারীরিক পরিশ্রম না করা, পানি কম খাওয়ার ফলে পেটে গ্যাস তৈরি হতে পারে।

প্রথমদিকেই সচেতন না হলে পরবর্তীতে আলসার হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এবার জেনে নেই কোন কোন খাবার দ্রুত এসিডিটি কমায়-

আদা

অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান সমৃদ্ধ খাবার হলো আদা। এই উপাদান গ্যাসের সমস্যা, বুক জ্বালাপোড়া, হজমে সমস্যা এবং অ্যাসিডিটির সমস্যা দ্রুত সমাধানে সক্ষম। পেট ফাঁপা এবং পেটে গ্যাস হলে কাঁচা আদা কুচি করে লবণ দিয়ে খান, দেখবেন গ্যাসের সমস্যার দ্রুত সমাধান পাবেন।

পেঁপে

পেঁপেতে রয়েছে পেপেইন নামক এনজাইম যা হজমশক্তি বাড়ায়। তাই নিয়মিত পেঁপে খাওয়ার অভ্যাস করলে গ্যাসের সমস্যা কম হবে। পেঁপে কাঁচা-পাকা দু’অবস্থায় খেতে পারেন। সবটাতেই উপকার পাবেন।

হলুদ

হজম সংক্রান্ত সব ধরনের সমস্যা সমাধানে হলুদ দারুণ কার্যকর। এটি চর্বিজাতীয় খাবার হজমে ভূমিকা রাখে। তাছাড়া হলুদে প্রদাহনাশক উপাদান থাকে, যা প্রদাহ কমায়।

কলা

যারা বেশি করে লবণ খান, তাদের গ্যাস ও হজমে সমস্যা হতে পারে। কলায় যে পটাশিয়াম আছে তা শরীরের সোডিয়াম ও পটাশিয়ামের ভারসাম্য বজায় রাখে। কলা হজমেও সাহায্য করে। দেহ থেকে দূষিত পদার্থ দূর করে দেয়।

পানি

পানির বহু গুণ। প্রতিদিন সকালে খালি পেটে দুই গ্লাস করে পানি পান করবেন, দেখবেন সারাদিন আর গ্যাস্ট্রিকের যন্ত্রণা সইতে হবেনা। কারণ পানি হজম শক্তি বাড়াতে বেশ কার্যকরী। তাছাড়া পানি পরিপাকতন্ত্র পরিষ্কার রাখতেও কাজ করে।

জিরা

আমাদের প্রায় সবার রান্নাঘরেই জিরা নামক মসলাটি পাওয়া যাবে। এটি অনেক ধরনের রান্নার কাজে ব্যবহার করা হয়। জিরা কিন্তু গ্যাস্ট্রিক সারাতেও দারুণ কার্যকরী। এটি হজম রসকে উদ্দীপিত করে। এর ফলে বদহজম ও অ্যাসিডিটির মতো সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। মসলাদার বা মুখরোচক খাবারের সঙ্গে অনেককেই জিরাপানি খেতে দেখবেন।

তুলসিপাতা

পেটের যেকোনো সমস্যা দূর করতে তুলসিপাতার ব্যবহার বেশ পুরোনো। এই পাতার নির্যাস গ্যাস্ট্রাইটিসে আক্রান্ত ইঁদুরের গ্যাস্ট্রিক মিউকোসার প্রদাহ কমানোর ক্ষেত্রে কার্যকরী বলে গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে। আপনি যদি নিয়মিত তুলসি পাতা খান তবে ওষুধ ছাড়াই দূর হবে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা।

মৌরি

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করতে আরেকটি কার্যকরী খাবার হলো মৌরি। এটি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করার পাশাপাশি কোষ্ঠকাঠিন্য সারাতেও কাজ করে। মৌরি আমাদের পাকস্থলী এবং অন্ত্রের পেশীগুলোতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। এর ফলে অ্যাসিড রিফ্লাক্সের কারণে সৃষ্ট গ্যাস ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।

ক্যামোমিল টি

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার জন্য আরেকটি সহজ ও কার্যকরী খাবার হলো ক্যামোমিল টি। এই ভেষজ চা নিয়মিত খেলে ওষুধ ছাড়াই দূর হবে গ্যাস্ট্রিক। ক্যামোমিল টি গ্যাস্ট্রিকের কারণে সৃষ্ট প্রদাহ কমানোর পাশাপাশি মুক্তি দেয় আলসার থেকেও। প্রতিদিন এক কাপ ক্যামোমিল টি পান করলে আপনার হজম ক্ষমতা বাড়াতে কাজ করবে।

দই

দইয়ে ল্যাকটোব্যাকিলাস, অ্যাসিডোফিলাস ও বিফিডাসের মতো নানা ধরনের উপকারী ব্যাকটেরিয়া থাকে। এসব উপকারী ব্যাকটেরিয়া দ্রুত খাবার হজমে সাহায্য করে সেই সঙ্গে খারাপ ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে। তাই দই খেলে হজম ভালো হয়, গ্যাস কমে। এজন্য খাবারের পর দই খাওয়া বেশ কার্যকর। বিশেষ করে টক দই।

শসা

পেট ঠাণ্ডা রাখতে বেশ কার্যকরী খাবার শসা। কাঁচা শসা হজমেও সাহায্য করে। এতে রয়েছে ফ্লেভানয়েড এবং অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান যা পেটে গ্যাসের উদ্রেক কমায়। এছাড়া এতে আছে প্রচুর সিলিকা ও ভিটামিন-সি। যা দেহের ওজন কমাতে আদর্শ টনিক হিসেবে কাজ করে। নিয়মিত শসা খেলে দীর্ঘমেয়াদি কোষ্ঠকাঠিন্যও দূর হয়।

পুদিনা

পেট ফাঁপার সমস্যা থাকলে নিয়মিত পুদিনাপাতা খাবেন। এই ভেষজ আপনার পেটে গ্যাস জমতে দেয় না। পেপারমিন্ট অয়েলে থাকে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল যৌগ, যা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে আপনাকে সাহায্য করবে।

আনারস

আনারসে রয়েছে ৮৫ শতাংশ পানি এবং ব্রোমেলিন নামক হজমে সাহায্যকারী প্রাকৃতিক এনজাইম যা অত্যন্ত কার্যকরী একটি পাচক রস। এটি পরিপাকতন্ত্র পরিষ্কার রাখে। তাছাড়া আনারস ত্বকের জন্যও উপকারী।

গ্যাসের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া খুব বেশি কঠিন কিছু নয়। শুধু একটু নজর রাখতে হবে নিজের খাওয়া-দাওয়ার প্রতি। উল্লেখিত খাবারগুলোর সঙ্গে আঁশ জাতীয় খাবার বেশি বেশি করে নিয়মিত খাওয়া শুরু করুন তাহলে দেখবেন আপনাকে আর গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় ভুগতে হবে না। কিনতে হবে না ওষুধ এবং সাশ্রয় হবে আপনার উপার্জিত অর্থ।

শনিবার, ১৬ জুলাই, ২০২২

জুলাই ১৬, ২০২২

রাতে আটার রুটি ছাড়া পেট পরিষ্কার হয় না?

রাতে আটার রুটি ছাড়া পেট পরিষ্কার হয় না?


বেশির ভাগ বাঙালি বাড়িতে রাতে রুটি খাওয়ার চল রয়েছে। বরং বলা চলে, ভারতের অধিকাংশ বাড়িতেই রুটি খাওয়া হয়। অন্যদিকে, প্রাতঃরাশে এখন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ওটস। যদি আটার তৈরি রুটি ও ওটসের মধ্যে বিচার করা হয়, তাহলে পুষ্টিবিদরা এই দুটো খাবারকেই খাদ্যতালিকায় রাখার পরামর্শ দেন।

 রুটি অবশ্যই স্বাস্থ্যকর এবং পুষ্টি গুণে ভরপুর। অন্যদিকে, ওটসেরও জুড়ি মেলা ভার। এটি যেমন ওজন কমাতে সাহায্য করে, তেমনই কোলেস্টেরলের মাত্রা, ডায়াবেটিসের মতো রোগের ঝুঁকি কমায়। 

এখন মানুষের মধ্যে উচ্চ কোলেস্টেরলের মাত্রা, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে গিয়েছে। অস্বাস্থ্যকর খাওয়া-দাওয়া কারণে এখন বেড়ে চলেছে ওবেসিটির সমস্যা। এখানেই আটার রুটির বদলে আপনি যদি ওটসের তৈরি রুটি খান তাহলে সুস্থ থাকবেন। 

যতই হোক আটায় ওটসের চাইতে বেশি ক্যালোরি রয়েছে। পাশাপাশি এতে রয়েছে কার্বোহাইড্রেটেড। আটার রুটির বিকল্প হয়তো কিছু হয় না। এটা স্বাস্থ্যকর ঠিকই। পাশাপাশি দু-তিনটে রুটি খেলে পেটও ভরে যায়। কিন্তু একই ভাবে আপনি যদি ওটসের তৈরি রুটি খান, তাহলে বেশি ভাল হয়। 

একটা আটার রুটির মধ্যে ৯০ থেকে ১১০ ক্যালোরি থাকে। সারাদিনে যদি আপনি তিনটে রুটি খান, তাহলে কম করে ৩০০ ক্যালোরি গ্রহণ করেন। যদি আপনি ওজন কমাতে চান, তাহলে বেছে নিতে পারেন ওটসের রুটি। ওটসের রুটি আটার রুটির বিকল্প হতে পারে। 

রাতে আটার রুটি ছাড়া পেট পরিষ্কার হয় না


ওটসের তৈরি একটা রুটিতে ৬০ ক্যালোরি রয়েছে। আপনি যদি দিনে তিনটে ওটসের রুটিও খান, সেখানে আপনি খুব বেশি হলে ১৫০ ক্যালোরি গ্রহণ করবেন। পাশাপাশি ওটসের মধ্যে ফাইবার রয়েছে। 

টি কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। রক্তে শর্করার মাত্রাকেও নিয়ন্ত্রণে রাখে। উচ্চ রক্তচাপের সমস্যাকেও নিয়ন্ত্রণে রাখে। 

তাছাড়া ওটসের রুটি আটার রুটির তুলনায় অনেক বেশি নরম হয়। তাহলে চলুন দেরি না করে দেখে নেওয়া যাক, কীভাবে তৈরি করবেন ওটসের রুটি

জুলাই ১৬, ২০২২

জেনে নিন কোন খাদ্য কম্বিনেশন শরীরের জন্য ক্ষতিকারক

খাদ্য


সাধারণত যেকোনও খাবার খেতে বসে আমরা একটা বা দুটো পদ নিয়ে খেতে বসি। কোনও কঠিন খাদ্যের সঙ্গে আমরা সাধারণত একটি পানীয় খাই। ব্রেকফাস্টে ওটসের সাথে দুধ বা বিকালের জলখাবারে পিৎজার সঙ্গে কোল্ড ডিংক্স খান। আপনি হয়তো নিজের অজান্তেই বিপদকে ডেকে আনছেন। 

কিছু খাদ্য কম্বিনেশন রয়েছে যা কখনোই এক সঙ্গে খাওয়া উচিত নয়। শরীরের ওপর ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলে এই খাদ্য সমন্বয় গুলি। তবে এমন কোনও নিয়ম বা বাধ্যবাধকতা নেই যে কঠিন খাবারের সঙ্গে পানীয়ই শরীরে ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলবে। 

অনেক সময় এমনও খাবার বা খাদ্য সমন্বয় আমরা খাই, যা শরীরে ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলে। 

তাহলে আসুন জেনে নেওয়া যাক কোনও কোনও খাদ্য কম্বিনেশন আপনার জন্য ভয়ঙ্কর প্রমাণিত। ডিম এবং ব্যাকন দুটোই ব্রেকফাস্টের অতি জনপ্রিয় খাবার। আবার এই দুটোর মধ্যেই প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন রয়েছে। দুটি প্রোটিন জাতীয় খাবার এক সঙ্গে খেলে আপনার শরীরে ক্ষতিকারক প্রভাব পড়বে। 

শরীরে ভিটামিন, প্রোটিন, মিনারেল মাত্রা সঠিক পরিমাণে না থাকলে একাধিক রোগ দেখা দেয়। তাছাড়া, অত্যাধিক প্রোটিন খেলে তার হজম ক্ষমতাও আপনার মধ্যে থাকা জরুরি। 

সাধারণত বেশি মাত্রায় প্রোটিন গ্রহণ করলে শরীর তা সহ্য করতে পারে না আর তখনই বদ হজমের সমস্যা দেখা দেয়। তাই চেষ্টা করুন যে কোনও ধরণের দুটি প্রোটিন জাতীয় খাবার এক সঙ্গে না খেতে।

দুধের মধ্যেও প্রোটিন বর্তমান, তাই দুধও হজম হতে সময় লাগে বেশি। দুধের সঙ্গে আপনি যদি কোনও সাইট্রাস ফল অর্থাৎ লেবু জাতীয় ফল বা ফলের রস পান করেন তাহলে তা আপনার শরীরে নানান সমস্যা তৈরি করবে। সাইট্রাস ফল বা সাইট্রাস ফলের রসে অ্যাসিড থাকে। 

আপনি যদি দুধের সাথে এই অ্যাসিড পান করেন তাহলে পেটেও অ্যাসিডিটির সমস্যা দেখা দেবে। এর ফলে পেটে জ্বালাভাব অনুভব করতে পারেন। তাই এই দুটি খাবারকেও একসাথে এড়িয়ে চলুন।

দুধ


একই ভাবে দুধের সঙ্গে যদি কলা খান তাহলেও হজমের সমস্যা দেখা দেবে। এই দুটি খাবারই হজম হতে সময় লাগে বেশি। যদি আপনি কলার মিল্কশেক পান করেন তাহলে তাতে অল্প পরিমাণ জায়ফল বা দারুচিনির গুঁড়ো মিশিয়ে নিন।

লাঞ্চ বা ডিনারের সঙ্গে ফল খাবেন না। ফল হজম হতে সময় লাগে বেশি। অন্যদিকে, লাঞ্চ বা ডিনারে ভাত বা রুটির মত খাবার খাওয়া হয়, যা হজম হতে সমস্যা লাগে বেশি। তাই চেষ্টা করুন এই খাবার গুলিকে এড়িয়ে যাওয়ার। পিৎজার সঙ্গে কোল্ড ডিংকস পান করেন ?

 ক্ষতি ডেকে আনছেন নিজেরই। পিৎজা নয় বরং যেকোনও চিস খাবারের সঙ্গে কোল্ড ডিংকস খেলেই ক্ষতি হবে শরীরে। এতে প্রভাব পড়বে আপনার হজম ক্ষমতার ওপর। তাই চেষ্টা করুন এই খাদ্য সমন্বয় গুলি এড়িয়ে চলার।

জুলাই ১৬, ২০২২

ওজন কমানোর সহজ উপায়

ওজন কমানোর সহজ উপায়


বিশেষত মেয়েদের ওজন নিয়ে চিন্তার শেষ নেই। বিয়ে যাওয়ার আগে আপনার পছন্দের গাউনটা বার করে পড়তে গিয়ে অবাক হচ্ছেন, একি এটা সেদিনও তো ঠিকই ছিল? এখন হঠাৎ টাইট কেন হচ্ছে? কিংবা মেট্রো স্টেশনে দাঁড়িয়ে ট্রেন আসার অপেক্ষা করতে করতে একবার মনে হল ওজন মাপার যন্ত্রে নিজের ওজনটা একবার দেখে নি। আর তখনই চক্ষু চড়কগাছ? এমন হতেই পারে। যতই ভাবছেন ওজন সঠিক রাখবেন, ততই যেন দিনে দিনে ওজন বেড়ে চলে।

শারীরিক গঠন এবং খাওয়া-দাওয়ার অভ্যাস এর ওপর মানুষের শরীরে মোটা হয়ে যাওয়ার প্রবণতা নির্ভর করে। আর তাই আমাদের সকলকেই একটা নির্দিষ্ট খাদ্যাভ্যাস, একটি সঠিক জীবনযাত্রার ওপর নির্ভর করে চলতে লাগে। তাই জেনে নিন কিভাবে খুব সহজে ওজন কমিয়ে আপনাকে রোগা করে তুলবেন এবং ওজন কমানোর জন্য কোন কোন খাবার গুলো আপনি খাবেন। 

এছাড়া আর কি কি মেনে চলবেন? কেননা মেদহীন, একটি তন্বী চেহারা আমাদের সকলেরই স্বপ্ন থাকে। আসুন তবে জেনে নিন রোগা হওয়ার কিছু সহজ উপায়। রোগা হওয়ার উপায়গুলি জানার আগে অবশ্যই আপনাকে নিজেকে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ করে তুলতে হবে যে, আমি অবশ্যই এটি মেনে চলবো। নিজেকে সুন্দর ছিপছিপে করে তুলতে চাইলে ওজন কমানোর উপায় গুলি মেনে চলুন এবং নিজের প্রয়োজনীয় খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুন। 

ওজন কমানোর অর্থাৎ রোগা হওয়ার উপায় গুলি এক নজরে দেখে নিন :

গ্রিন টি পান করুন:

গ্রিন টি হল একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যুক্ত পানীয়, যা শরীর থেকে টক্সিন রিমুভ করতে এবং পেটের চর্বি কমাতে সহায়তা করে। দিনে অন্তত দুই থেকে তিনবার যদি গ্রিন টি পান করতে পারেন তাহলে এক সপ্তাহে প্রায় ৪০০ থেকে ৫০০ ক্যালরি আপনার শরীর থেকে হ্রাস পাবে। তাই সকালে ব্রেকফাস্ট এর সাথে এবং বিকেল বেলা স্নেক টাইমে এক কাপ করে গ্রিন টি পান করুন।

এটি শরীরের মেদ কমানোর পাশাপাশি আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা প্রদান করবে। যার ফলে ত্বক সহজে আর্দ্রতা হারাবে না এবং শরীর সুস্থ থাকবে। ওজন কমানোর উপায় গুলির মধ্যে গ্রিন টি পান একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এইটিকে ভুলে গেলে চলবে না। এটি অবশ্যই আপনার দৈনন্দিন জীবনের অঙ্গ করে তুলুন।

ভারসাম্যপূর্ণ খাবার খান:

তাড়াতাড়ি রোগা হওয়ার জন্য খাদ্য তালিকা থেকে ফ্যাট এবং কার্বোহাইড্রেটকে একেবারে বাদ দিয়ে দিলেন, কেবলমাত্র প্রোটিন জাতীয় খাদ্য গ্রহণ করলেন; এটি কখনো করবেন না। কেননা শরীরের জন্য সব ধরনের খাদ্য উপাদানই প্রয়োজনীয়। হ্যাঁ, কিছু অন্তত বাদ দিতে হবে। তবে আমাদের শরীরের ক্ষেত্রে ভালো কার্বোহাইড্রেট এবং ভালো ফ্যাট এর প্রয়োজন আছে।

তাই নিজের খাবার এমনভাবে খান কিংবা খাদ্য তালিকা এমন ভাবে প্রস্তুত করুন যেখানে প্রয়োজনীয় পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন ও ফ্যাট তিনটিই উপস্থিত থাকে। আপনার খাদ্যতালিকায় এই তিনটি খাদ্য উপাদান সঠিক মাত্রায় থাকলে তা শরীরের ভারসাম্য বজায় রেখে শরীরকে প্রয়োজনীয় শক্তি সরবরাহ করে এবং শরীরের অনাক্রমতা বাড়াতে সাহায্য করবে। এর পাশাপাশি সুস্থভাবে স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাবে।

যার ফলে শরীর থেকে চর্বি কমে গেলেও আপনার শরীর সুস্থ এবং প্রাণোজ্বল থাকবে। কারণ রোগা হতে গেলে শরীরে সব ধরনের খাদ্য উপাদানের প্রয়োজন। কোনোটার পরিমাণ কম, কোনোটার বেশি। তাই সেই কথা মাথায় রেখে নিজের দৈনন্দিন আহার গ্রহণ করুন। কেননা ওজন কমানোর টিপসে কখনোই কার্বোহাইড্রেট ও ফ্যাট জাতীয় খাবার বাদ দেওয়া হয় না।

আস্তে আস্তে চিবিয়ে খান:

গবেষণায় লক্ষ্য করা গিয়েছে যে, আপনি যত ধীরে ধীরে খাবার চিবিয়ে খাবেন আপনার ক্যালরি কত পরিমান খরচ হতে থাকবে। কেননা আস্তে আস্তে চিবিয়ে খেলে তা শরীরকে বেশি খাবার খেতে বাধা দেয় এবং মস্তিস্ককে একটা নির্দেশনা প্রেরণ করে যে আমার পেট ভর্তি হয়ে গেছে। এছাড়াও এটি পাচন প্রক্রিয়াকে সহায়তা করে।

কেননা আপনি খাবার যত ধীরে ধীরে চিবিয়ে খাবেন সেটা খুব দ্রুত হজম হতে সহায়তা করবে। এছাড়াও কোন খাবার যদি প্রতিবার মুখে ৩৫ থেকে ৫০ বার চিবিয়ে খাওয়া যায় এতে আপনার মুখের মেদও যেমন কমতে থাকবে, এর পাশাপাশি খাবারটি ও ভালো করে মিশিয়ে আপনার পেটে যাবে। যা আপনার হজম শক্তিকে আরো উন্নত করবে।

তাই রোগা হতে গেলে অবশ্যই আপনি যে খাবারটি খাচ্ছেন সেটি ভালো করে চিবিয়ে খান এবং খেতে বসে তাড়াহুড়ো না করে ধীরে ধীরে সময় নিয়ে খাবারটি খান। এটি আপনার শরীরকে হজমে সহায়তা করবে এবং শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করবে। ওজন কমানোর ঘরোয়া উপায় গুলির মধ্যে এটি অন্যতম।

খাদ্যতালিকায় ফল, শাকসবজি এবং দানা শস্য জাতীয় খাবার রাখুন:

ওজন কমানোর টিপস মেনে রোগা হতে গেলে অবশ্যই আপনার খাদ্য তালিকার দিকে নজর দিতে হবে। আর সেই তালিকায় খাবারগুলি আপনার যেমন পছন্দসই হতে হবে তেমনই তো আপনার শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় হতে হবে। ওজন কমানোর ক্ষেত্রে খাদ্যতালিকায় প্রোটিন জাতীয় খাদ্য, কম ক্যালরি যুক্ত ফল, সবজি এবং দানাশস্য জাতীয় খাদ্য বেশি মাত্রায় রাখতে হবে।

এছাড়াও প্রতিদিন তিনটি আলাদা রকমের ফল, ৫ টি আলাদা ধরনের শাকসবজি এবং ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। এ কারণে আপনি খাদ্যতালিকায় ব্রাউন রাইস, বাদামি পাউরুটি, পপকন, বার্লির মতো গোটা দানা শস্য গুলি অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। এটি আপনার শরীরকে প্রয়োজনীয় ফাইবার সরবরাহ করবে। এই ধরনের খাদ্য গুলি গ্রহণ করার ফলে আপনার পেট অনেকক্ষণ ভর্তি মনে হবে এবং কিছুক্ষণ বাদে বাদে খিদে পাবে না।

যার ফলে আপনার উল্টোপাল্টা খাবার প্রবণতাটা ও কমবে এবং শরীর নিজের প্রয়োজনীয় ক্যালোরি কমাতে পারবে। ওজন কমানোর খাবার গুলির মধ্যে এই গুলির কথা অবশ্যই মাথায় রাখবেন যা আপনার শরীরকে একটি নির্দিষ্ট গঠন দিতে সাহায্য করবে।

প্রতিবার খাবারের সাথে প্রোটিন গ্রহণ করুন:

দিনে কমপক্ষে তিনটি বড় মিল এবং তিনটি ছোট মিল রাখতে চেষ্টা করুন এবং প্রতিবারই খাবার সময় কিছু পরিমাণ প্রোটিন জাতীয় খাদ্য খাওয়ার চেষ্টা করুন। চর্বিহীন প্রোটিন জাতীয় খাবার গুলি যেমন টক দই, বাদামের মাখন, ডিম, মটরশুঁটি, মাংসের ছোট ছোট অংশ এগুলি খাদ্যতালিকায় রাখার চেষ্টা করুন। কিংবা যে কোন ধরনের সেক এর মাধ্যমে শরীরে প্রোটিন জাতীয় খাদ্য গ্রহণ করুন।

কেননা ওজন কমানোর সময় শরীরে যথাযথ পরিমাণে প্রোটিন জাতীয় খাদ্য সরবরাহ করতে হবে। কারণ এটি শরীরকে সচল রাখার পাশাপাশি শরীরকে পরিশ্রম করার প্রয়োজনীয় শক্তি সম্পাদন করে থাকে। এছাড়া প্রোটিন জাতীয় খাদ্য মেদ কমাতে সহায়তা করে। তাই ওজন কমানোর ক্ষেত্রে খাদ্যতালিকায় প্রোটিন জাতীয় খাবার বেশি পরিমাণে গ্রহণ করার চেষ্টা করুন। খাদ্য গ্রহণের সময় অবশ্যই ওজন কমানোর এই টিপসটি মাথায় রাখুন।


একদিন নিজের সাথে প্রতারণা করতেই পারেন:

একনাগাড়ে ডায়েট চার্ট মেনে খাবার খেতে খেতে বিরক্ত হয়ে গেছেন কিংবা একঘেয়ে হয়ে যাচ্ছেন মনে হচ্ছে? এটি যাতে না হয় সেই কারণেই সপ্তাহে ছদিন সুষম খাদ্য গ্রহণ করলেও একটি দিন প্রতারণার দিন হিসেবে অর্থাৎ ‘চিট ডে’ হিসেবে রাখতে পারেন। এই দিনটি আপনার মনের খুশিতে আইসক্রিম, ফুচকা, কোল্ড ড্রিংকস, এগরোল, বিরিয়ানি যা খুশি খেতে পারেন।

এই দিন আপনাকে কেউ বাধা দেবে না। কেননা এই একদিন আপনি বাইরের খাবার গ্রহণ করার ফলে শরীর একটু অন্য খাবার গ্রহণ করতে সক্ষম হবে। যার ফলে শরীরেরও একঘেয়ে মনে হবে না। যে কোনো কাজই আমরা যদি প্রতিনিয়ত একভাবে করে থাকি সেক্ষেত্রে আমাদের বিরক্ত যেমন আসে শরীরেরও তেমনি একই ধরনের সাদামাটা খাবার খেয়ে খেয়ে বিরক্ত আসতেই পারে।

সেই জন্য ডায়েট অনুসরণ করার সময় অবশ্যই একটি ‘চিট ডে’ রাখবেন। না হলে আপনার কষ্ট করে করা ডায়েটটি হয়তো কার্যকর নাও হতে পারে। তাই ওজন কমাতে গিয়ে বাইরের খাবারকে একেবারেই না করবেন না। একটা দিন রাখুন যেদিন আপনি নিজের পছন্দ মতন খাবার খাবেন।


প্যাকেটজাত পানীয় বর্জন করুন:

ওজন কমাতে গিয়ে প্যাকেটজাত পানীয় ভুলেও কিন্তু খেতে যাবেন না। কিংবা হঠাৎ করে ইচ্ছা হল বলে ক্যালোরি বিহীন কোল্ড্রিংসের ক্যান একদম খেতে যাবেন না। কেননা ওগুলি স্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে পারে। এটাকে প্যাকেটজাত পানীয়গুলি ক্যালোরিবিহীন দাবি করলেও এই গুলিতে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা শরীরে উপকারের বদলে অপকারই করে।

এমন কি এগুলো আপনার শরীরের ওজন না কমিয়ে বৃদ্ধিতে অংশগ্রহণ করবে। তাই যদি ফলের রস খেতে হয় সেটা বাড়িতে বানিয়ে খান। এছাড়া এই ধরনের প্যাকেটজাত পপানীয় গুলিতে চিনির পরিমাণ বেশি থাকে। তাই এগুলি অতিরিক্ত পান করলে ডায়াবেটিসের সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে।

তাছাড়া এগুলি কত দিনের আগেকার তৈরি তা সঠিক জানা যায় না বলে এগুলির তাজা ভাব নিয়েও সন্দেহ থাকে। তাই ফলের রস খেতে হলে অবশ্যই বাড়িতে মিক্সার এটা তৈরি করে নিন। এটি যেমন স্বাস্থ্যকর এবং পুষ্টিকর এবং শরীরের জন্য যথাযথ।

অতিরিক্ত রন্ধন থেকে বিরত থাকুন:

ওজন কমানোর খাবার তৈরি করার সময় সেগুলি অতিরিক্ত রন্ধন করা থেকে বিরত থাকুন। কেননা খাদ্য উপাদান গুলির অতিরিক্ত রন্ধন প্রক্রিয়ার ফলে সেগুলি নিজেদের পুষ্টিগুণ হারাতে পারে। সে কারণে আপনি যে জন্য খাচ্ছেন সেই কারণটাই হয়তো পূরণ হলো না অর্থাৎ যে পুষ্টি গুলি শরীরকে দেওয়ার জন্য আপনি খাবারগুলো খাচ্ছেন সেগুলো হয়তো কার্যসিদ্ধি হলো না।

কিংবা শরীর সেই প্রয়োজনীয় উপাদান গুলি গ্রহণ করতে পারল না। তাই কোন রান্নাই বেশিক্ষণ করবেন না। হালকা ভাবে করার চেষ্টা করুন। অতিরিক্ত রান্না করার ফলে খাদ্য উপাদান গুলি পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়, সেগুলি জাঙ্ক খাবারের মতন হয়ে যেতে পারে। তাই ভাপে পদ্ধতিতে কিংবা গ্রিল করে, বেকড করে যেকোনো ধরনের খাবার ওজন কমানোর জন্য আপনি খেতে পারেন। এতে শরীর তার পুষ্টি তাও পাবে এবং আপনার খেতেও ভালো লাগবে। খুব বেশি মসলা খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।

প্রয়োজনে দিনে তিনবার বড় মিল গুলি নেওয়ার সময় অবশ্যই চার পাঁচটি ফল সবজির মিশ্রনে স্যালাড গ্রহণ করুন এবং রঙিন শাকসবজি খাদ্যতালিকায় রাখুন। এগুলি আপনার মনকে যেমন ভালো রাখবে তেমনি আপনার শরীরকে সুস্থ রাখতে সচেষ্ট হবে। তাই ওজন কমানোর জন্য খুব বেশি রান্না এড়িয়ে চলুন।

রাতের খাবার ৭:৩০ টার আগে খান:

খাদ্য তালিকা তৈরীর সময় অবশ্যই মাথায় রাখবেন প্রত্যেকটা খাদ্যের মাঝে যেন দু’ঘণ্টার একটি বিরতি থাকে এবং রাতের শেষ খাওয়া অর্থাৎ ডিনার যাতে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার আগেই হয়ে যায় সেই বিষয়টি নিশ্চিত করবেন। খুব বেশি যদি খিদে পায় সে ক্ষেত্রে ঘুমোতে যাবার আগে মাখন তোলা দুধ কিংবা গ্রিন টি খেতে পারেন। তবে রাতের খাবারটা সেটি অবশ্যই সাড়ে সাতটার মধ্যে শেষ করবেন। কেননা ঘুমাতে যাওয়ার অন্তত তিন ঘণ্টা আগে রাতের খাবার খাওয়া উচিত।

খেয়ে ঘুমোতে যাওয়া একদমই উচিত নয়। এর ফলে খাবার গুলো সঠিক ভাবে হজম হতে পারে না এবং রাত্তিরবেলা সেগুলি পেটের মধ্যে জমে থেকে পেটে এক ধরনের বাড়তি মেদ সৃষ্টি করে। সুতরাং খাবার ৩ ঘণ্টা আগে যদি রাতের খাবারটা সেরে নেওয়া যায় তারপর গল্পের বই পড়ুন, টিভি দেখুন, বা যেকোন হালকা কাজ আপনি করে নিতে পারেন। যার ফলে ঘুমাতে যাওয়ার আগেই সেই খাবারটি হজম হয়ে যাবে।

তাই যদি খিদে পেয়ে যায় ঘুমোতে যাওয়ার আগে সে ক্ষেত্রে এক কাপ গ্রিন-টি কিংবা অল্প মাখন তোলা দুধ কিংবা জল খেয়ে আপনি সেই সামরিক ক্ষুধাটা নিবারণ করতে পারেন। অথবা আপনি যদি খাওয়া থেকে রাত্রিবেলা বিরত থাকতে চান সে ক্ষেত্রে তখন দাঁত ব্রাশ করে নিন, এতে খিদের যে ইচ্ছাটা সেটা আপনি ভুলে যাবেন এবং আপনি সুস্থ এবং স্বাস্থ্যকর থাকতে পারবেন এবং ওজন কমানোর বিষয়ে আপনি আর এক ধাপ এগিয়ে যাবেন।

ওজন কমানোর জন্য এই ঘরোয়া উপায় গুলি অবলম্বন করুন দেখবেন খুব দ্রুতই আপনার পছন্দের পোশাক টা আপনি পড়তে পারছেন।

আপনার খাদ্য তালিকায় নজর দিন:

আপনি সারাদিন কি ধরনের খাবার খাচ্ছেন কিংবা আপনার খাদ্য তালিকার খাদ্য গুলির দ্বারা আপনার শরীরের প্রয়োজন মিটছে কিনা সেই বিষয়টি অবশ্যই মাথায় রাখবেন। কেননা ওজন কমাতে গিয়ে যদি কোন রকম খাবারের পরিমাণ কমে যায় সে ক্ষেত্রে ওজন কমার পাশাপাশি আপনি শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে যাবেন এবং শরীরের অনাক্রমতা ক্ষমতাও লোপ পাবে এবং শরীর অসুস্থ হয়ে উঠবে।

তাই শরীরকে সুস্থ সম্মতভাবে তন্বী করে তোলার জন্য রোগা হওয়ার উপায় গুলি অবলম্বন করার পাশাপাশি অবশ্যই আপনার খাদ্যতালিকায় নজর দিতে হবে। যাতে খাদ্যতালিকায় কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফ্যাট, ভিটামিন, মিনারেল জাতীয় উপাদান গুলি সঠিক মাত্রায় থাকে।

যা আপনার শরীরকে সুস্থ এবং স্বাস্থ্যকর করে তুলবে। আর নিজেকে স্বাস্থ্যকর রাখলে আপনি যেমন অন্য একজনের প্রেরণা হবেন তেমনি আপনার মন ভালো থাকবে নিজেকে সুস্থ দেখে। এর পাশাপাশি ওজন কমানোর জন্য ব্যায়াম করতে ভুলবেন না যেন।


নিজেকে হাইড্রেটেড রাখার চেষ্টা করুন:

ওজন কমানোর উপায় গুলি অবলম্বন করার পাশাপাশি যে বিষয়টি আপনাকে মাথায় রাখতে হবে, একটি সুষম খাদ্য তালিকা যেমন প্রয়োজন, তেমনি সঠিক জীবনযাত্রা এবং ব্যায়াম আপনাকে আপনার পুরনো চেহারা ফেরত দিতে পারে। কিন্তু সেই সঙ্গে অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে ডায়েট চার্ট অনুসরণ করে যেমনি খাবারগুলো খাচ্ছেন তার পাশাপাশি দৈনিক ৮ থেকে ১০ গ্লাস জল আপনাকে খেতে হবে।

সঠিক পরিমাণে জল পান করলে শরীর থেকে প্রয়োজনীয় টক্সিন বের হয়ে যেতে যেমন সাহায্য করবে তেমনি খারাপ জিনিসগুলিও জল এর মাধ্যমে আপনার শরীর থেকে বেরিয়ে যাবে। তাই দৈনিক যারা কঠোর পরিশ্রম করেন মোটামুটি চার থেকে পাঁচ লিটার জল খেতে হবে। অন্যথায় যারা সাধারন পরিশ্রমী কিংবা কম পরিশ্রমী দৈনিক তাদের ৩ লিটার করে জল পান করতে হবে। কেননা ওজন কমানোর উপায় গুলির মধ্যে অন্যতম একটি উপায় হলো জল পান।

শরীরে যদি জল পানের পরিমাণ কম দেখা যায় সে ক্ষেত্রে আপনি ক্লান্ত বোধ করতে পারেন কিংবা শরীর অবসন্ন থাকতে পারে। এর পাশাপাশি এর প্রভাব আপনার বিপাক প্রক্রিয়াতেও পড়তে পারে। যার ফলে শরীর থেকে চর্বি কমার বদলে সেটা বেড়ে যেতে পারে। প্রয়োজনীয় জল না খেলে যে খাদ্য গুলি আপনি খাচ্ছেন সেটি আপনার বিপাক ক্রিয়াকে সচল করতে পারবে না, যার ফলে আপনার ওজন কমানোর ক্ষেত্রে সেটি বাধা দান করবে। তাই ঘরোয়া উপায়ে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে নিজেকে রোগা করতে গেলে অবশ্যই খাদ্যতালিকায় জলের পরিমাণটা নির্দিষ্ট রাখুন।

প্রয়োজন হলে ফোনে অ্যালার্ম দিয়ে রাখুন কখন কতটা পরিমাণে জল আপনি গ্রহণ করবেন। সেটি যাতে আপনার মনে থাকে, সে কারণে। কেননা সঠিক মাত্রায় জল গ্রহণ না করলে আপনার শরীর আর্দ্রতা হারাবে এবং শুষ্ক হয়ে উঠবে যার ফলস্বরূপ আপনার ওজন কমাতে এটি বাধা দান করবে। মেয়েদের ওজন কমানোর ক্ষেত্রে এটি একটি প্রয়োজনীয় উপায়।


প্রতিটি পদক্ষেপ গণনা করুন

দৈনিক ব্যস্ততার মাঝে কিংবা কাজের চাপে আমরা হয়তো ভুলেই যাই আমাদের হাঁটাচলাটাও খুব প্রয়োজনীয়। সে ক্ষেত্রে যদি সময় করে মর্নিং ওয়াক, ইভিনিং ওয়াকে যেতে না পারেন আপনার কাজের মধ্যেই আপনি আপনার প্রয়োজনীয় হাঁটা টা কিন্তু সেরে ফেলতে পারেন। একভাবে অফিসে বসে কাজ করতে করতে একঘেয়ে হয়ে যেতেই পারেন, তাই কাজের মাঝে ৩০ মিনিট অন্তর অন্তর যদি পাঁচ মিনিটের জন্য হাঁটাচলা করে নেন কিংবা বাড়িতে থাকাকালীন একভাবে ঘন্টার পর ঘন্টা না বসে যদি এক ঘন্টা পর পর পনেরো থেকে কুড়ি মিনিট ঘরের মধ্যে হাঁটা চলার অভ্যাস গড়ে তোলেন তাহলে এটি আপনার শরীরকে আরো সচল করে তুলবে এবং আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করবে।

এছাড়াও অফিসে যাওয়া, স্কুল পৌঁছানোর ক্ষেত্রে যদি ছোটখাটো যানবাহনের ব্যবহার না করে আপনার দুটো পাকে এই কাজে লাগান এক্ষেত্রে আখেরে লাভ আপনারই। অফিসে ওপরে সিঁড়ি ভেঙ্গে ওঠার জন্য লিফটের ব্যবহার বন্ধ করুন, দিয়ে হেটে যান। এর ফলে আপনার শরীর ভালো থাকবে। অফিস থেকে এসে সম্ভব হলে একটু ইভিনিং ওয়াক করুন কিংবা আপনার পোষা প্রাণীকে নিয়ে একটু বাইরে ঘুরে আসুন। এতে আপনার মনটা যেমন পরিবর্তন হবে তেমনি আপনার শরীরটা ও স্বাস্থ্যজ্জ্বল হয়ে উঠবে। এবং চেষ্টা করুন সারা দিন আপনি কয়বার হাঁটলেন সেই পদক্ষেপগুলি গোনার।

সম্ভব না হলে মোটামুটি একটি হিসাব করে নিন, আপনি কতটা হাঁটলে পরে সেটি আপনার শরীরের পক্ষে ভালো। কেননা শরীরকে যতটা সচল রাখবেন আপনার ওজন কমানোর ক্ষেত্রে এটা আরো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। তাই ওজন যদি সত্যিই কমাতে চান রোগা হতে গেলে মেয়েদের ওজন কমানোর উপায় গুলির মধ্যে অবশ্যই হাঁটাচলা করতে হবে।


মন ভরে হাসুন:

অবাক হচ্ছেন তো? ভাবছেন ওজন কমানোর ক্ষেত্রে হাসির ভূমিকা কি? ওজন কমাতে হাসির ভূমিকা সর্বাগ্রে। এটি ওজন কমানোর অন্যতম একটি ঘরোয়া উপায়। কেননা একটি সুস্থ মনই একটি সুস্থ শরীর গঠন করতে পারে। এছাড়াও দৈনিক যদি একটি নির্দিষ্ট সময় করে হাসা যায় এটি আপনার হার্ট রেট কে সঠিক রাখে এবং শরীরের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে।

এছাড়াও আপনার শরীরের পেশিগুলিকে এক ধরনের টান অনুভব করে, যেগুলি আপনার শরীরকে সুস্থ এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও হাসির মধ্য দিয়ে দৈনিক প্রায় কিছু ক্যালোরি কমানো যায় যেটি আপনাকে রোগা করে তুলতে অত্যন্ত সহায়তা করবে। তাই দিনে ১০ থেকে ১৫ মিনিট আপনি যদি সময় করে হাসতে পারেন সে ক্ষেত্রে আপনার ৫০ ক্যালোরি মত আপনার শরীর থেকে কমতে পারে। বছরের শেষে যেটা গিয়ে দাঁড়ায় চার থেকে পাঁচ পাউন্ড।

সুতরাং এই ফ্যাটই আপনি বিনা পরিশ্রমে কেবলমাত্র মনকে খুশি দিয়েই কিংবা হেসেই কমাতে পারে। তাই আর এখন ভাবছেন কেন? ডায়েটিং ছাড়াই আপনি বছরে চার থেকে পাঁচ পাউন্ড ওয়েট কমাচ্ছেন কেবলমাত্র হেসে। তাহলে আর অপেক্ষা কিসের? দিনে একটা নির্দিষ্ট সময় বার করে নিন হাসার জন্য এবং নিজেকে খুশি রাখার জন্য। এই কারণেই ওজন কমানোর ক্ষেত্রে হাসির গুরুত্ব অনেক।

প্রক্রিয়াজাত খাদ্য এড়িয়ে চলুন:

বাজারজাত যেকোনো ধরনের প্রক্রিয়াজাত কিংবা প্যাকেটজাত খাদ্য গুলি এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। কেননা এই ধরনের খাদ্য গুলি চটজলদি তৈরি করা গেলেও এর মধ্যে স্বাস্থ্যকর কোন পুষ্টিগুণ থাকে না। বরং এটি শরীরে বাড়তি ফ্যাট প্রদান করে যেগুলি আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর। তাই ঘরে তৈরি খাবার তৈরি করে খাওয়ার চেষ্টা করুন এবং বাইরের খাবার গুলো এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন।

তবে একেবারে বন্ধ না করে এগুলো আপনি আপনার ‘চিট ডে’তেও খেতে পারেন। একদিন যদি এগুলি খান সে ক্ষেত্রে বাকি ৬ দিনের সেই ক্যালোরিটা পূরণ হয়ে যাবে। কিন্তু দৈনিক খাবার তালিকা থেকে এই ধরনের প্যাকেটজাত খাবার গুলি কে বাদ দিন এবং দৈনিক কম ক্যালরিযুক্ত পুষ্টিকর খাওয়া গুলিকে নিজের খাদ্য তালিকায় রাখার চেষ্টা করুন। এগুলি আপনাকে খুব তাড়াতাড়ি ওজন কমিয়ে রোগা হতে সাহায্য করবে।

ভাল করে ঘুমান:

নিজেকে সুস্থ রাখতে ওজন কমিয়ে রোগা করতে গেলে অবশ্যই আপনাকে দিনে ঘুমটা ঠিকমত পূরণ করতে হবে। এটি ওজন কমানোর জন্য একটি অন্যতম ঘরোয়া উপায়। কেননা শরীর একটি যন্ত্রের মত,এর প্রয়োজন বিশ্রামের সেই কথাটা ভুলে গেলে চলবে না। তাই শরীরকে বিশ্রাম দিন। দিনে অন্তত আট ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন। যারা ৪ ঘন্টা কিংবা ৬ ঘণ্টা ঘুমান সে ক্ষেত্রে তাদের শরীরে মেদের পরিমাণ অত্যধিক লক্ষ্য করা যায়

 তাই শরীরকে বিশ্রাম দিন এবং দিনে ৮ ঘণ্টা নিশ্চিন্তে ঘুমানোর চেষ্টা করুন। ঘুমোতে যাওয়ার আগে কোন ধরনের মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ এ কাজ করবেন না। এটি আপনার ঘুমে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে কিংবা ঘুমের ক্ষতি করতে পারে। সে জন্য আপনি ঘুমানোর জন্য একটা নির্দিষ্ট সময় ঠিক করে নিন।

যে সময়টি আপনি ভালভাবে ঘুমাতে পারবেন। আমরা যখন ঘুমিয়ে থাকি শরীর কিন্তু তখন তার ক্ষত নিরাময়ের কাজগুলি সেরে ফেলে এবং পাচন ক্রিয়া সম্পন্ন করে। সারাদিন ধরে যে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফ্যাট জাতীয় খাবার গুলি আপনি গ্রহণ করলেন সেই খাদ্যগুলির পাচন প্রক্রিয়াটাকে যথাযথভাবে সম্পন্ন করতে সহায়তা করে।

তাই ঘুম যদি কম হয় সে ক্ষেত্রে হরমোনের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে কিংবা ইনসুলিনের পরিমাণ শরীরে বেড়ে যেতে পারে। যার ফলে বিভিন্ন ধরনের রোগ দেখা দিতে পারে। তাই রাতে সঠিক পরিমাণে ঘুমান। মোট ৮ ঘন্টা ঘুমালে এটি আপনার ওজন কমাতেও সাহায্য করে আপনাকে রোগা করে তুলবে। কেননা রাতে ভালো ঘুম না হলে এটি আপনার শরীরে মেদ বৃদ্ধি করতে সহায়তা করবে।


মেডিটেশন করুন:

দিনের শুরুতে ভোরবেলা অন্তত ১০ মিনিট মেডিটেশন করুন। কেননা আমাদের জীবনের মানসিক চিন্তা, স্ট্রেস কিংবা বিভিন্ন চাপ, বিষণ্ণতা ইত্যাদি নানান ধরনের নেতিবাচক আবেগ আমাদের শরীরের ওপর প্রভাব ফেলে। যার ফলে ওজন বৃদ্ধি হতে পারে। তাই নিজেকে সুস্থ রাখতে এবং ওজন কমানোর জন্য অবশ্যই আপনাকে ইতিবাচক চিন্তা ধারা করতে হবে। 

এজন্য নিজের মনকে শান্ত করুন এবং রোজ সকালবেলা ১০ মিনিট করে মেডিটেশন করুন। দৈনিক মেডিটেশন করার ফলে শরীর তার প্রয়োজনীয় অক্সিজেন গ্রহণ করতে পারবে। কেননা যদি আমরা অত্যধিক চিন্তা বা স্ট্রেস এর মধ্য দিয়ে জীবন যাপন করি সে ক্ষেত্রে শরীর তার প্রয়োজনীয় অক্সিজেন গ্রহণ করতে পারে না, যার ফলে শরীরের সর্বাঙ্গে রক্ত সঞ্চালন ঠিক ভাবে হয় না। 

ফলস্বরূপ আমাদের ওজন বৃদ্ধি হয়। তাই নিজেকে সুস্থ এবং রোগা করে তুলতে অবশ্যই দৈনিক ১০ মিনিট করে মেডিটেশন করুন। এবং ওজন কমানোর জন্য ব্যায়াম ও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এটি আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করবে।


প্রেরণামূলক উক্তি পড়ুন:

ওজন কমানোর জন্য ডায়েটিং ছাড়াও বেশ কয়েকটি বিষয় আছে যেগুলি আমরা মেনে চললে আমাদের খুব সহজেই ওজন কমবে। তার মধ্যে অন্যতম হলো প্রেরণামূলক উক্তি পড়া। দৈনিক যদি আপনি বেশি মাত্রায় ইতিবাচক চিন্তা ভাবনা করেন কিংবা নিজেকে প্রেরণা দিতে পারেন সে ক্ষেত্রে আপনি ওজন কমাতে সচেষ্ট হবেন। 

ডায়েট করার পাশাপাশি আপনি যে কাজটি দিনে পছন্দ করেন সে খেলাধুলা হোক ছবি আঁকা হোক সেই কাজটি করার চেষ্টা করুন এবং আপনার ঘরের বিভিন্ন কোণে সেই কাজটি সম্পর্কে নিজের লেখা বিভিন্ন ধরনের প্রেরণামূলক উক্তি লিখে রাখুন। এটি দৈনিক যখন আপনার চোখে পড়বে, আপনার মনে এক ধরনের প্রেরণা সৃষ্টি হবে। 

যার ফলে দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যেই আপনি ডায়েটিং ছাড়াও কিছু পরিমান ওজন কমাতে সচেষ্ট হবেন এবং দৈনিক এই কাজটি করতে করতে আপনার দৈনন্দিন জীবনে অভ্যাসে পরিণত হবে। তাই নিজের শরীরকে সুস্থ করে তুলতে এবং নিজেকে ওজন কমিয়ে রোগা করে তুলতে অবশ্যই প্রেরণামূলক উদ্ধৃতিগুলি লেখার এবং পড়ার অভ্যাস করুন।

বৃহস্পতিবার, ১৪ জুলাই, ২০২২

জুলাই ১৪, ২০২২

শিশুর ওজন বৃদ্ধির জন্য খাদ্য তালিকা

শিশুর ওজন বৃদ্ধির জন্য খাদ্য তালিকা
শিশুদের ওজন নিয়ে বাবা-মায়ের চিন্তার কমতি নেই। শিশুর ওজন বাড়াতে খাবার তালিকায় কী ধরনের খাবার রাখবেন? শিশু খাবার খেতে চায় না, দিন দিন রোগা হয়ে যাচ্ছে – শিশুর স্বাস্থ্য নিয়ে এমন অভিযোগ প্রায় সব মায়েদের। সেক্ষেত্রে; শিশুর ওজন বৃদ্ধির জন্য খাবার তালিকায় কয়েকধরণের খাবার অবশ্যই অ্যাড করতে হবে। আজকাল মায়েরা সবথেকে বেশি যে সমস্যার সম্মুখীন হয় তা হচ্ছে; শিশু খেতে চায় না! মায়েদের এই সমস্যার সমাধান করে দেবে আজকের এই ফিচার। এমন কিছু খাবার আছে যা শিশুর ওজন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। আসুন জেনে নেওয়া যাক শিশুর ওজন বৃদ্ধির উপায় হিসেবে কোন কোন খাবারগুলো সহায়ক তা নিয়ে বিস্তারিত। শিশুর ওজন বৃদ্ধি করতে মায়েদের চিন্তার শেষ নেই।

আজকাল মায়েদের চিন্তার সবচেয়ে বড় কারণই হচ্ছে শিশুর ওজন। ওজন কখনো বৃদ্ধি পাচ্ছে কখনো আবার কমে যাচ্ছে। শিশুর বয়সের সাথে সাথে সঠিক ওজন থাকছে কিনা তা লক্ষ্য রাখা খুবই প্রয়োজন। কিভাবে কোন খাবারগুলো শিশুর ওজন বৃদ্ধিতে সহায়ক তা জানলেই শিশুর সঠিক পরিচর্যা করা সম্ভব। আজকে আমরা আপনাদের জানাবো কিভাবে কোন খাবারগুলো শিশুর ওজন বৃদ্ধিতে সহায়ক। চলুন জেনে নেই শিশুর খাবারের সঠিক তালিকা।

দুধঃ শিশুদের ওজন বৃদ্ধিতে দুধ একটি আর্দশ খাবার। এক বছর থেকে শুরু করে বড় বাচ্চাদের গরুর দুধ দিতে পারেন। প্রাকৃতিক প্রোটিন (protein) এবং কার্বোহাইড্রেটের (carbohydrate) প্রধান উৎস হচ্ছে দুধ। প্রতিদিন শিশুকে দুই গ্লাস দুধ খাওয়ানো শিশুর স্বাস্থের জন্য উপকারী। কিন্তু আজকাল শিশুরা দুধ খেতেই চায় না। তাই দুধকে বিভিন্নভাবে তৈরি করে যেমন সর, ক্রিম ইত্যাদি বিভিন্ন খাবারে যুক্ত করে খাওয়াতে পারেন। মনে রাখতে হবে; শিশুর সঠিক বিকাশ ঘটাতে দুধের বিকল্প নেই। তাই শিশুর প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় দুধ অবশ্যই থাকতে হবে। 

ডিমঃ প্রোটিনের উৎস হিসেবে ডিমের কথা আমরা সবাই জানি। প্রতি ১০০ গ্রাম ডিমে প্রায় ১৪ গ্রাম প্রোটিন রয়েছে। আর শিশুর ওজন বৃদ্ধিতে প্রোটিনের ভুমিকা অপরিসীম। তাই শিশুর প্রতিদিনের খাবারে ডিম রাখুন। একটি ডিম প্রোটিন, ভিটামিন, মিনারেল, সবকিছুর চাহিদা পূরণ করে থাকে যা শিশুর ওজন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে থাকে। শিশুর বাড়তি শরীরে যেন সঠিক কার্বোহাইড্রেট পৌঁছায় সেদিকে বিশেষ লক্ষ্য রাখতে হবে। আর ডিম কার্বোহাইড্রেটের প্রধান উৎস। তাই শিশুর খাবারের তালিকায় ডিম অপরিহার্য। 

মাখনঃ মাখন স্বাস্থ্যকর ফ্যাটের অন্যতম উৎস। বড়দের মাখন খাওয়ায় কিছুটা সাবধান থাকতে হলেও শিশুদের ক্ষেত্রে এই নিয়ম প্রযোজ্য নয়। ওজন বৃদ্ধির জন্য শিশুর প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় মাখন রাখুন। তা হতে পারে মাখন রুটি বা অন্যকিছু। এটি দ্রুত শিশুর ওজন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে।

মিষ্টি আলুঃ মিষ্টি আলু শিশুকে ছয় মাস বয়সের পর থেকে দিতে পারেন। পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিনের সমৃদ্ধ এই খাবারটি দ্রুত শিশুর ওজন বৃদ্ধি করে।

কলা


কলাঃ ছয় মাস বয়সের পর থেকে শিশুকে কলা দেওয়া যেতে পারে। কলায় প্রচুর পরিমাণ ফাইবার, পটাশিয়াম, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি ৬ রয়েছে যা শিশুর শরীরের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে ওজন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

মুরগির মাংসঃ প্রোটিনের অন্যতম একটি উৎস হলো মুরগির মাংস। এটি পেশি মজবুত করে শিশুর ওজন বৃদ্ধি করে। তবে প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় মুরগির মাংস না রেখে মাছের পাশাপাশি সপ্তাহে এক দুই দিন মুরগির মাংস রাখুন।

অ্যাভোকাডোঃ ওজন বৃদ্ধির জন্য এই ফলটি বেশ কার্যকর। এতে ফ্যাট, ক্যালোরি সবকিছু একসাথে পাওয়া যায়। এর পুষ্টি উপাদান ওজন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। দ্রুত ফল পেতে প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় অ্যাভোকাডো রাখুন। স্বাদবিহীন বলে বাচ্চারা খেতে চাবে না ফলটি, কিন্তু একটু টেস্টি করে তৈরি করলে আগ্রহ ভরে খেতে চাইবে।

জুলাই ১৪, ২০২২

কমলালেবুর ব্যাবহারে ত্বক হয়ে উঠে আরও উজ্জ্বল

কমলালেবুর ব্যাবহারে ত্বক হয়ে উঠে আরও উজ্জ্বল

কমলালেবুর কথা শুনে নিশ্চয় শীতকালের কথা মনে পড়ে গেল। এই তীব্র গরমের চেয়ে শীতকালই বেশ ভালো বলা চলে। শীতে ত্বকের সমস্যা দেখা দেয় কম। তবে গরম পড়তেই ত্বকের হাজারো সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তারমধ্যে অন্যতম হল ব্রণের সমস্যা। তবে ত্বকের নানা সমস্যা দূর করতে অন্যতম উপকারী হল কমলালেবু।


বর্তমানে শীত হোক কিংবা গরম সব কালেই সব ধরনের ফল, সবজি পাওয়া যায়। অর্থাৎ গরমে যেমন শীতের ফল, সবজি পাওয়া যায়, তেমনই শীতে গরমের ফল, সবজি পাওয়া যায়। তাই এই গরমে ত্বকের সমস্যা দেখা দিলে ব্যবহার করতে পারেন কমলালেবু। 

চলুন তবে ত্বকের যত্নে কমলালেবুর উপকারিতাগুলো দেখে নেওয়া যাক-

  • কমলালেবু আমাদের ত্বক উজ্জ্বল করতে এবং ত্বকের মৃত কোষ তুলতেও সাহায্য করে। এক্ষেত্রে আপনি প্রথমে কমলালেবুর খোসা রোদে শুকিয়ে নেবেন ভালো করে। তারপর শুকনো কমলালেবুর খোসা মিক্সিতে গুড়ো করে নেবেন। এরপর পরিমাণ মত গুড়ো নিয়ে তাতে মধু ও মুলতানি মাটি মিশিয়ে একটি স্ক্রাব তৈরি করে নিন। এরপর এই স্ক্রাব মুখে লাগিয়ে হালকা হাতে স্ক্রাব করুন। এভাবে কিছুক্ষন রেখে ধুয়ে ফেলুন। এতে ত্বক উজ্জ্বল হওয়ার সাথে সাথে ত্বকের মৃত কোষ দূর হবে। তবে  ব্রণের উপর বেশি স্ক্রাব ঘষবেন না।
  • এছাড়া কমলালেবুর খোসা গুড়ো এর সাথে দুধ কিংবা জল মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করতে পারেন। সেই প্যাক মুখে লাগিয়ে কিছুক্ষণ রেখে ধুয়ে ফেলুন। এতে ত্বকে বয়সের ছাপ দূর হবে। ত্বকের তারুণ্য বজায় থাকবে।
  • অন্যদিকে যারা ব্রণের সমস্যায় ভুগছেন তারা ব্রণের ওপর কমলালেবুর আলতো হতে ঘষে লাগান। এতে ব্রণ চটজলদি শুকিয়ে যাবে। এবং ত্বক ব্রণ মুক্ত হয়ে উঠবে। এছাড়া কমলালেবুর রস মুখে লাগালে ত্বকও তরতাজা থাকবে।

চিনি সেবন দাঁতের ক্ষয়ের অন্যতম কারণ হতে পারে। এটি ধীরে ধীরে দাঁতের এনামেল নষ্ট করে দেয়। তাই যদি দেখেন, দাঁতের ক্ষয় শুরু হয়েছে তাহলে খাদ্যতালিকা থেকে চিনি বাদ দিন। এছাড়াও একাধিক রোগের কারণ হল অতিরিক্ত চিনি সেবন। আপনি যদি বাড়তি ওজন কমাতে চান তাহলে সবার আগে খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দিতে হবে চিনি। চিনিতে থাকা ক্যালোরির কারণে ওজন বৃদ্ধি পায়। তাই সুস্থ থাকতে চাইলে ও ওজন কমাতে চাইলে খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দিন চিনি।

জানেন কি ডিপ্রেশনের কারণ হতে পারে চিনি! অনেকেই এই বিষয়ে অবগত নন। কিন্তু, গবেষণায় দেখা গিয়েছে যারা অধিক চিনি খান তারা ডিপ্রেশনে ভোগেন। তাই খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দিন চিনি। তেমনই চিনি কিডনির ওপর খারাপ প্রভাব ফেলে।  আপনার যদি ত্বকে কালো ছোপ ছোপ দেখা দেয় তাহলে সতর্ক হন। হাতে পায়ে কিংবা মুখে যদি কালো কালো স্পট দেখেন, তাহলে চিনি খাওয়া বন্ধ করুন।

চিনিতে থাকা একাধিক উপাদান ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। তাছাড়া, অতিরিক্ত চিনি খেলে শরীরে ক্যান্সারের মতো রোগ বাসা বাঁধতে পারে।